শহরের
অভিজাত পাড়ার ঠিক পেছনেই
প্রায় মরে
যাওয়া খালটার প্রান্তঘেঁষে
গড়ে উঠেছে
খুপড়িগুলো, ভদ্রপল্লীর পাশে
এগুলো এখন
বড্ড বেশি বেমানান;
আরও
বেমানান ওখানে বসবাসকারী মানুষগুলো।
ওপারে
আকাশ ছোঁয়া ইমারত, এপারে নর্দমার
পাশে গায়ে
গায়ে লাগানো বস্তিবাড়ি-
অবিরাম খিস্তিখেউড়
আর চিৎকার-চেচামেচি,
মাঝেমধ্যে
বেদম প্রহারের শব্দও শোনা যায়;
রাস্তায়
কুকুরগুলোর ক্রমাগত কোরাস-
মিলেমিশে
একাকার হয়ে যায় মানুষের স্বরের সাথে।
এখানে নৃপতি পুরুষ, আক্রোশে তেড়ে
যায়
মেয়েমানুষের
দিকে, হাড় জিরজিরে হ্যাঙলা শরীরে
কি যে শক্তি!
এখানে তার একচ্ছত্র আধিপত্য,
ঐ ওপরতলার
মানুষের ক্ষমতা কি তাকে ঠেকায়!
ছেলেটি দূরে
দাঁড়িয়ে মাকে দেখে,
ভেজা স্যাঁতসেঁতে
কালচে মেঝেতে পড়ে থাকা
মাটির
কুণ্ডলী, ছোট্ট শরীর ছুটে যায় কাছে,
মা পরম
যত্নে আগলে রাখে বুকে,
বয়স কতই-বা
আর? পাঁচ কি ছয়!
রুগ্ন
শরীরে হাড়গুলো বড় প্রকটভাবেই দৃশ্যমান,
ওপারে ভদ্রপল্লীর
ব্যলকনিতে পেরামবুলেটরে
তুলতুলে
শিশু, মা দেখে আর ভাবে- কত তফাৎ
মানুষে-মানুষে,
ধনী-গরীবে; এইতো জীবন!
সুর্য
অস্ত গেলে জেগে ওঠে রাত্রি আবার,
সারাদিনের
কর্মক্লান্তি ভুলিয়ে দেয় বেদনার সব ক্ষত,
ভেজা রজনীর বুকে ওঠে ঝড়,
অস্থির যুগল-হৃদয় তখন
অন্যভাষায় কথা বলে, দখিনা
হাওয়ায় শর্তহীন
আত্মসমর্পনের মাঝে
মিশে যায় ঘাম আর
খাল থেকে ভেসে আসা
গন্ধ- কখনও কখনও
থিয়েরী
মুগলার কিংবা আরমেনীকেও হার মানায়।
দূরে
একাদশী নির্বাক চাঁদ অবিরত জোছনা বিলায়,
ওর কাছে
ভদ্রপল্লী কিংবা এই খুপড়িগুলোর মধ্যে
কোন ব্যবধান নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন